আকরাম নান্দাইল ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহের নান্দাইল প্রতিনিধি
২০২৪-২৫ অর্থবছরের কাবিখা (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ রাস্তা সংস্কারে অনিয়ম, জবরদস্তি ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে নান্দাইল উপজেলার গাঙ্গাইল ইউনিয়নে। অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন ৫ নং গাঙ্গাইল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফয়জুর রহমান ফরিদ।
স্থানীয়রা জানান, প্রকল্পের আওতায় গোপীনাথপুরে রাসেলের বাড়ির সামনে গোপাট হতে মঞ্জিলের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৫ দশমিক ৩ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ ছিল। কিন্তু শ্রমিক ব্যবহার না করে ভেকু (এক্সকাভেটর) দিয়ে বসতবাড়ির সীমানা থেকে মাটি কেটে গভীর গর্ত তৈরি করা হয়। এতে ঘরবাড়ির স্থায়িত্ব হুমকির মুখে পড়ে এবং বর্ষার পানিতে এসব গর্ত শিশুদের জন্যও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কিছু গর্তের গভীরতা ১০ থেকে ১২ ফুট। কবরস্থানের লাগোয়া স্থান থেকে মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে। কিছু বাড়ির সীমানা ঘেঁষে খোঁড়া গর্তের পাশে বাঁশ ও টিন দিয়ে ঘরের মালিকেরা ঘর রক্ষার চেষ্টা করছেন। কয়েকটি বসতবাড়ির ভেতর থেকেও মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বৃদ্ধা জয়বানুর (৮৫) পরিবার অভিযোগ করে, তাঁদের বসতবাড়ির জমি থেকে মাটি কাটতে বাধা দিলে ইউপি সদস্য ফরিদ নিজেই আবু বক্কর ও তাঁর বৃদ্ধা মা জয়বানুকে মারধর করেন। পরে গুরুতর আহত জয়বানুকে নিয়ে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে মেম্বার ফয়জুর রহমান ফরিদ বাধা দিয়ে রোগিকে ভর্তি না করে জি ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিয়ে যায় ডাঃ মোঃ রকিবুল হাসান নিশু এমবিবিএস, বিসিএস( স্বাস্থ্য) পরিক্ষা করে ডাক্তার চিকিৎসার পর বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি হতে দেয় নাই ইউপি মেম্বার ফরিদ ।
জয়বানু বলেন, “কোমড়ের ব্যথা এখনো যায়নি বাবা। ফরিদ মেম্বার নিজেই আমারে মারছে। টুবলা বানাইছে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মুখ খুললে হামলার শিকার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাঁরা বলেন, “আমরা গরিব মানুষ, কথা কইলেই ফরিদ মেম্বার মারে। আবু বক্করের মা-ডারেও ছাইড়া দেয় নাই।”
প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে ফরিদ মেম্বার স্বীকার করেন, ভেকু ব্যবহার করা হয়েছে। মারধরের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বলেন, “কি বলব ভাই, মাত্র ৫ টন ৩০০ কেজি গমের বরাদ্দ।”
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আহসান উল্লাহ বলেন, “আমি আগেই পরিদর্শন করেছিলাম। তবে এখন আবার গিয়ে কাজটা দেখে আসব।” ফাইনাল বিল অনুমোদনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আগে গিয়ে দেখেছিলাম।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিনা সাত্তার বলেন, “এই বিষয়ে আমি খোঁজ নিব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এলাকাবাসীর দাবি, এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে এমন অনিয়ম আর কেউ করতে না পারে।